শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২৯ পূর্বাহ্ন
আরিফ হোসেন,বাবুগঞ্জ॥ একজন অভাগী মায়ের নাম মর্জিনা বেগম। দু’ছেলে জন্ম দেওয়ার পর তাঁর স্বামী মারা যান। স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকেই দুঃখ-কষ্ট ঘিরে ধরেছে মর্জিনা বেগমকে। তাঁর বাবা-মা অনেক স্বপ্ন নিয়ে তাকে বিয়ে দিয়ে ছিলেন বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার মধাবপাশা ইউনিয়নের পূর্ব পাংশা গ্রামের নাসির উদ্দিন হাওলাদারের সাথে।
৯ মাসের ২য় সন্তানকে রেখে ১৯-০২-২০০৯ খ্রিঃ তারিখে স্বামী নাসির উদ্দিন হাওলাদার ব্রেইন স্ট্রোকে মৃত্যু বরণ করেন। সেই থেকেই অসহায় মা মর্জিনা বেগমের জীবন যুদ্ধ শুরু।
অন্যের বাড়িতে ঝিঁয়ের কাজ করে প্রথম সন্তান রিমন হাওলাদার কে এসএসসি পাশ করান। রিমন এসএসসি পাশ করে সরকারি আবুল কালাম কলেজে ভর্তি হয় । লেখা-পড়ার পাশাপাশি বরিশাল পল্লি বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর শ্রমিক হিসাবে কাজ শুরু করেন ছোট ভাই ও মায়ের মুখে দু’মুঠো ভাত তুলে দিতে।
২৮-০১-১৯ইং তারিখে রিমন উপজেলার রহমতপুর মীরগঞ্জ সড়কের ক্ষুদ্রকাঠী এলাকায় পল্লি বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর ঠিকাদারের বিদ্যুতের খুটি নামাতে গিয়ে দূর্ঘটনায় মৃত্যু বরণ করে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সন্তান রিমনের মৃত্যুতে ভেঁঙ্গে পরে মর্জিনা বেগম।
ছোট ছেলে মোঃ আহাদ হোসেন (১০) বর্তমানে ছয়মাইল নব আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত রয়েছে।
মর্জিনা বেগম অন্যের বাড়িতে কাজ করে ছোট ছেলেকে নিয়ে অসহায় জীবন যাপন করছেন ।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মর্জিনা বেগম শ্বশুরের ঘরের পাশে ছাউনি দিয়ে কোন রকম মাথা গোঁজার ঠাই করে সেতসেতে যায়গায় বসবাস করছেন। তিনি এখন পর্যন্ত কোন ধরনে সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা পাননি। ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের কাছে বিধবা ভাতার জন্য আবেদন করা হলে তিনি আশ্বস্ত করে বলেন শিঘ্রই পাবেন।
১মে শ্রমিক দিবসে মর্জিনা বেগমের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমার সন্তান শ্রম বিক্রি করতে গিয়ে জীবন দিয়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এখন আর খবর নেয় না। আমার অসহায় জীবনে সরকারি বেসরকারি কোন ধরনের সুবিধা আমি পাই নি। আমার থাকার জন্য একটা ঘর দরকার । কে আমাকে ঘর করে দেবে? ছোট ছেলেটিকে নিয়ে বাকি জীবন নিশ্চিন্তে কাটাতে চাই।
সমাজ পতিদের প্রতি অনুরোধ রইলো যাহাতে মর্জিনা বেগমের জীবন যুদ্ধে আপনাদের সাহাজ্য সহযোগীতা ও সহমর্মিতা পায়।
Leave a Reply